রামাদানে শয়তানকে শিকলবদ্ধ রাখা হয়, যে শয়তান আপনার গুনাহ করার একটি কারণ। গুনাহ করার অন্য আরেকটি কারণ হলো আপনার নফস। কিন্তু কেউ যদি রামাদানেও পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে বুঝতে হবে তার নফসুল আম্মারাহ বিস-সু স্বয়ং শয়তানের চেয়েও খারাপ। আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় নাফস মন্দ কজের নির্দেশ দিয়ে থাকে।” (সূরাহ ইউসূফ: আয়াত ৫৩)
তাই নফসকে নিয়ন্ত্রণ ও পরাজিত করার এটাই সময়। শয়তান যেমন শিকলবদ্ধ আছে, আপনার খারাপ প্রবৃত্তিকেও তেমনিভাবে শিকলবদ্ধ করে ফেলুন। রামাদান হলো ঈমানের জন্য শিফা বা ঔষধ। কারণ সময়ের সাথে সাথে ঈমানে দুর্বলতা আসে। প্রতিবার কাপড় ধোয়া হয়, বারবার ফলে কাপড় পুরোনো হয়ে যেতে থাকে। একইভাবে ধাতুর জিনিস যেমন- লোহা বাতাসে ফেলে রাখলে অক্সিডেশনের মাধ্যমে তার গায়ে মরিচা পড়ে যায়। তাবারানি গ্রন্থে আব্দুল্লাহ ইবনু উমার (s) থেকে বর্ণিত আছে, নবীজি (৳) বলেন, “কাপড় যেভাবে পুরোনো হয়ে যায়, তেমনি তোমাদের অন্তরে ঈমানও পুরোনো হয়ে যায়। তাই আল্লাহর কাছে দু'আ কর যেন তিনি তোমাদের অন্তরসমূহে ঈমানকে পুনরায় তাজা করে দেন। _মুসতাদরাক আল হাকিম: ৫
.
তাই আপনি আল্লাহর কাছে দু'আ করবেন, তবে সে অনুযায়ী আপনাকে আমলও করতে হবে। রামাদান আপনার অন্তরের ময়লা ঝেড়ে দেয়। কাপড় সেলাই করার মতোই রামাদান ঈমানকে নতুন, তাজা করে দেয়, আর আপনাকে নতুন উদ্যমে ইবাদাতের জন্য উজ্জীবিত করে। রামাদান আমাদেরকে নফসের সাথে লড়াই করতে শেখায়। শয়তান যেভাবে শিকলবদ্ধ হয়ে পড়ে—সেভাবে নফসকেও বন্দী করার মাধ্যমে রামাদান আমাদের ঈমানে প্রাণশক্তি সঞ্চার করে দেয়। এই রামাদানে পানাহার ও স্ত্রী সহবাসের মতো হালাল কাজ থেকে যদি আপনি বিরত থাকেন, তবে সারা বছরই যে সব কাজ হারাম থাকে—তা থেকে বিরত থাকার জন্য রামাদান আপনাকে তৈরি হওয়ার সুযোগ করে দেয়।
.
তাই এখনই সময়, আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্কটা মজবুত করে নিন। আর এই প্রক্রিয়া আপনাকেই শুরু করতে হবে, প্রথম পদক্ষেপটা আপনাকেই নিতে হবে। এক হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, “বান্দা আমাকে যেমন ভাবে, আমি তেমনই। সে যখন আমাকে স্মরণ করে, আমি তার সাথেই আছি।" আপনিই আগে আল্লাহকে স্মরণ করবেন। আল্লাহ বলছেন, “সে যদি নিজে আমাকে স্মরণ করে, আমি নিজে তাকে স্মরণ করি। আর সে যদি কোনো মজলিসে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি এর চেয়ে উত্তম মজলিসে তাকে স্মরণ করি। সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হলে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই। সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হলে আমি তার দিকে দুই হাত অগ্রসর হই। সে আমার দিকে হেঁটে আসলে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।”
.
সুতরাং আল্লাহর দিকে প্রথম কদমটা আপনাকেই রাখতে হবে, তারপর আল্লাহ তাআলা আপনার ডাকে সাড়া দেবেন। কুরআনে এই ব্যাপারে বলা হয়েছে,
“তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।" (সূরাহ গাফির: আয়াত ৬০)
Comments List
KJwrRUQl | 16 Jan 2023 10:27 AM
555
None | 28 Jun 2024 2:30 AM
None